সোনায় বিনিয়োগ বা সোনায় কিভাবে ইনভেস্ট করব

সোনায় বিনিয়োগ করার জন্য প্রথমে আপনাকে  বাজেট নির্ধারণ করতে হবে ।

আপনার যদি বাজেট নির্ধারণ করা হয়ে যায় তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে সোনার বিনিয়োগ করে ব্যবসা করা যায় ?

বর্তমান সময়ে সবচাইতে লাভজনক খাত হচ্ছে স্বর্ণখাত। যেখানে আপনি বিনিয়োগ করলে লস খাওয়ার আশঙ্কা অনেক কম।

কিন্তু শুধুমাত্র যে লাভ হবে তা না। আপনি যদি ভুল জায়গায় ভুল ভাবে স্বর্ণে বিনিয়োগ করেন তাহলে উল্টা লস খেয়ে ধ্বংস হয়ে যাবেন।

তো আজকে আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করব যে কিভাবে স্বর্ণ সঠিকভাবে শুধুমাত্র টাকা বিনিয়োগ করেই ইনকাম করা যায়।

তো চলুন শুরু করা যাক আপনি যদি প্রশ্ন হয়ে থাকে যেঃ

কোথায় টাকা ইনভেস্ট করা যায়?

কিভাবে ইনভেস্ট করব?

সোনায় বিনিয়োগ

তাহলে আপনি সঠিক আরটিকাটি খুঁজে পেয়েছেন। 

এবার মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ুন

বিনিয়োগ করার জন্য সোনা কোথায় পাওয়া যায় ? 

ইনভেস্ট করার জন্য শুধুমাত্র জেলা লেভেলের পাইকারি দোকানদারের কাছেই সোনা পাওয়া যায়।

আপনি পাইকারি দোকান ছাড়া জুয়েলারি দোকান গুলোতে ইনভেস্ট করার মত সোনা পাবেন না।

বরং জুয়েলারি দোকান থেকে স্বর্ণ  যদি কিনেন, এবং সেটি যদি লাভের উদ্দেশে হয় তাহলে এখানে থেকে  লস খাবেন।

কত ক্যারেট সোনায় বিনিয়োগ করা যায় ?

সাধারণত ২৪ ক্যারেট সোনায় ইনভেস্ট বা বিনিয়োগ করা যায়। আপনি যদি ২৪ ক্যারেট সোনা ব্যতীত অন্যান্য ক্যারাটে ইনভেস্ট করেন তাহলে উল্টা লাভের বদলে লস খাওয়ার সম্ভাবনা ১০০%।

24 ক্যারেট সোনা কত প্রকার ?

বাংলাদেশের 24 ক্যারেট সোনা সাধারণত দুই প্রকার হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে দেশি পাকা ঝুড় সোনা। আরেকটি হচ্ছে পিস বা বিস্কিট সোনা ।

বাজারদর হিসেবে দেশি পাকা ঝুড় সোনার দাম সব সময় পিস বা বিস্কুট সোনার চাইতে ১০০০ টাকা কম থাকে।

সেটা কিনেন অথবা বিক্রি করেন সবসময়ই পিস বা বিস্কুট সোনার চাইতে 1000 টাকা কম ।

দেশি পাকা ঝুড় সোনা কি?

দেশি পাকা ঝুড় সোনা হচ্ছেঃ যেগুলো সোনা পুরাতন সোনা থেকে বিভিন্ন জুয়েলারি দোকানি বা কারিগরেরা নাইট্রিক এসিডের মাধ্যমে লোকাল ভাবে বিশুদ্ধ করে থাকে সে সকল সোনা।

এই সকল সোনার সঠিক মানের চাইতে কম হতে পারে। এজন্য এই সোনাতে বিনিয়োগ করা বোকামি।

পিস বা বিস্কুট সোনা কি ?

যে সকল সোনা স্বয়ংক্রিয় মেশিনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ হয়ে তৈরি হয় সেগুলো পিস বা বিস্কুট সোনা । যেখানে বিশুদ্ধ স্বর্ণের পরিমাণ ৯৯.৯৯% ।

এই সকল সোনা সাধারণত বিদেশ থেকে আমদানি হয়ে থাকে।

এবং বাংলাদেশে বর্তমানে সরকার অনুমোদিত ল্যাবে পুরাতন সোনা বিশুদ্ধ করার মাধ্যমেও এটি তৈরি করা হচ্ছে ।

সোনার গহনাতে কেন বিনিয়োগ করা উচিত নয়?

স্বর্ণের গহনা গুলো সাধারণত জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে থাকেন।

সেখানে যখন গহনা কেনেন তখন সব সময় ২১ ক্যারেট ২২ ক্যারেট এর দাম সাধারণত ২৪ ক্যারেট সোনার চাইতেও বেশি ধরা হয়। এবং এর সাথে মজুরি যোগ করা হয়।

কিন্তু আপনি যখন বিক্রি করতে যাবেন তখন মজুরি সেখান থেকে মাইনাস করা হবে। আবার বর্তমান দামের চাইতে ২০% বা তার চেয়ে কম বাদ দেয়া হবে।

ধরুন আপনি এক লাখ 10 হাজার টাকা ভরি হিসেবে গহনা বানালেন। এবার স্বর্ণের দাম এক লাখ বিশ হাজার। এখন আপনার স্বর্ণ বিক্রি করতে চাচ্ছেন।

তাহলে এবার হিসেবটা দেখুনঃ

আপনি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ভরি হিসেবে স্বর্ণ কিনেছেন । সেখানে আরো 6 হাজার টাকা বা তার চাইতে বেশি মজুরি যোগ করা হয়েছে।

তাহলে আপনার মোট খরচ ১ লাখ ১৬ হাজার টাকা। স্বর্ণের গহনা ১ লাখ ১০ হাজার প্লাস ৬ হাজার মজুরি।

এখন স্বর্ণের দাম ১ লাখ ২০ হাজার। তাহলে আপনি যেহেতু এক লাখ দশ হাজার টাকা ভরি হিসেবে স্বর্ণ কিনেছেন।

সেহেতু আপনি এক লাখ বিশ হাজার টাকা দিয়ে বিক্রি করলে অবশ্যই লাভের আশা করবেন।

কিন্তু আপনি যখন বিক্রি করতে যাবেন গহনাটি। তখন আপনার মজুরিটি সম্পূর্ণ বাদ দেয়া হবে ।

তাহলে যেহেতু এক লাখ 20 হাজার টাকা বর্তমান বাজার। তাই আপনাকে এক লাখ বিশ হাজার থেকে ১৫ থেকে ২০ পার্সেন্ট বাদ দেয়া হবে।

তাহলে এক লাখ বিশ হাজার থেকে যদি ১৫ পার্সেন্ট বাদ দেন। তাহলে আপনার লাভটা কোথায় আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

এবার চলুন মূল কথায় আসি।

২৪ ক্যারেট সোনায় বিনিয়োগ করলে কিভাবে লাভ হয় ?

ধরুন আপনি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা করে ২৪ ক্যারেট বিস্কুট সোনা কিনে রাখলেন।

এখন সোনার দাম যদি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা হয়। তাহলে আপনার চোখ বন্ধ করে ১ লাখ ১৯ হাজার ৫০০ টাকা বেচতে পারবেন।

তাহলে বুঝুন আপনার লাভ হলো না লস হলো।

এ থেকে আশা করি আপনি সঠিকভাবে বুঝতে পেরেছেন আপনার কোন সোনাতে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন ‌।

ধন্যবাদ

About গৌতম কুমার

আমি শুধুমাত্র একজন অভিজ্ঞ স্বর্ণশিল্পীই নই বরং পাশাপাশি একজন অভিজ্ঞ লেখক ও । আমার বিষয়ে জানতে বাজুস লাইভ ডট কম এর about পেজে যেতে পারেন

View all posts by গৌতম কুমার →

2 Comments on “সোনায় বিনিয়োগ বা সোনায় কিভাবে ইনভেস্ট করব”

  1. জ্বি বিষয়টা বুঝতে পেরেছি বিনিয়োগ করার সময় বাজারের অবস্হা ও চাহিদা মাথায় রাখতে হবে তাহলে লাভের সম্ভাবনা আরো বাড়বে। তবে একটা বিষয়ে এর কারন বুঝা দায় যেমন স্বর্ণ কেনার সময় তোহ ২২ ক্যারেট ২১ ক্যারেট খাদ সহই কেনা হয় যা থাকে গহনায় তা সহই ভরি হিসাব করা হয় এবং মূল্য নির্ধারন হয় তাহলে সেই একই স্বর্ণ বিক্রির সময় কেন দোকানদাররা খাদ বাদ দিয়ে ক্রয় করে?? আর এই নিয়ম কি শুুধু বাংলাদেশেই নাকি আন্তর্জাতিক বাজারেও একই নিয়ম??

    1. আন্তর্জাতিক বাজার এ পার্সেন্ট হিসেবে বাদ দেয়া হয় । যেখানে বাংলাদেশ এ খাদ হিসেবে তবে উভয় ই সমান। আর বিনিয়োগ করার জন্য ৯৯.৯৯% পিওর অর্থাৎ ২৪ ক্যারেটের সোনা বেছে নিতে হবে। তাহলে কোন বাদ যাবে না।
      ধন্যবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।